
মারধরের ভয়ে স্ত্রীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে থানায় স্বামী


বাগমারা প্রতিনিধি
গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করা স্ত্রীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বাগমারা থানায় হাজির হন স্বামী। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধরের ভয়ে আত্মহত্যাকারী স্ত্রী মিতা খাতুনের লাশ নিয়ে যান স্বামী শাকিল হোসেন। পরে শাকিলকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে লাশ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জানা গেছে, তিন বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের জেরে পরিবারের অসম্মতিতে পালিয়ে বিয়ে করেন শাকিল হোসেন (২৪) ও মিতা খাতুন (১৮)। তাদের দুই জনের বাড়ি রাজশাহীর বাগমারায় হলেও বিয়ের পর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে থাকতেন তারা। গত মঙ্গলবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে আত্মহত্যা করেন মিতা। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অভিযোগ, পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে মনোমালিন্যের জেরে মিতাকে হত্যা করে শাকিল। এ ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ‘মারধরের ভয়ে’ স্ত্রীর লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গ্রামে না গিয়ে গত শুক্রবার সকালে বাগমারা থানায় যান শাকিল। পরে তাকে হেফাজতে নিয়ে লাশ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। মারা যাওয়া মিতা খাতুন উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে। যুবক শাকিল হোসেন একই ইউনিয়নের ভটখালী গ্রামের বাসিন্দা। তাদের সাত মাস বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার সকালে বাগমারা থানায় আসে লাশবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্স। এ সময় শাকিল নামের এক যুবক পুলিশকে জানান, অ্যাম্বুলেন্সে তার স্ত্রীর লাশ রয়েছে। তিন দিন আগে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে এবং নারায়ণগঞ্জে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন এমন আশঙ্কায় তিনি লাশ নিয়ে থানায় আসেন। মিতার বাবা জালাল উদ্দিন বলেন, ‘শাকিল অন্য এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয় বলে জানতে পেরেছি। আমার মেয়েকে মেরে লাশ জানালার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়েছে। বাগমারা থানার ওসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মিতা আত্মহত্যা করেছে বলে তার স্বামী জানিয়েছে। শাকিলকে গত শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছিল। সন্ধ্যার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তার দাবি নারায়ণগঞ্জ থেকে কিছু লোক তাকে অনুসরণ করছিল, এই ভয়ে লাশ নিয়ে গোপনে চলে এসেছে। তিনি আরও বলেন, ‘লাশ দাফনের জন্য মেয়ের বাবার কাছে দেওয়া হয়। পরে গত শুক্রবার দুপুরে লাশ দাফন করা হয়েছে। এদিকে রূপগঞ্জ থানায় যেহেতু অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে এবং নারায়ণগঞ্জে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে, ফলে নতুন করে আর কোনও মামলা এখানে হয়নি। তবে শাকিলকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ